মুভি দেখলে কী সমস্যা?


মুভি দেখলে কী সমস্যা?

দ্বীনের ছায়াতলে আসার আগে অনেক হলিউড মুভি দেখা হত। কখনো কমেডি, কখনো অ্যাকশন, রোমান্স, সাই-ফাই, আরও কত কি। এ মুভিগুলো থেকে ভাল জিনিস খুব কমই শেখা যায়। খানিকের বিনোদন আর সময় কাটানো ছাড়া তেমন কোন ফায়দা নেই। বরং বেশিরভাগ মুভিতেই থাকে পর্নের ডজন ডজন ট্রিগার। যেখানে নায়ক-নায়িকার অন্তরঙ্গ মূহুর্ত দেখানোর কোন প্রয়োজন নেই, সেখানেও অতিরঞ্জনের সাথে তা প্রদর্শিত হবে।

সফটকোর পর্নে ভরে গেছে এই ইন্ডাস্ট্রি। অশ্লীল গল্পের কোন বই বের হলে তো কথাই নেই, সেই বইয়ের গল্পকে স্ক্রিপ্ট বানিয়ে তাকে সচল আলোকচিত্রের রূপ না দেওয়া পর্যন্ত এই ইন্ডাস্ট্রির ডিরেক্টরদের যেন ঘুম নেই।

শুধু সফটকোর পর্ন বানিয়েই এরা ক্ষান্ত নেই। এদের আসল টার্গেট আপনাকে হার্ড-কোর পর্নের দিকে ধাবিত করা, যা আপনাকে মাস্টারবেট করতে বাধ্য করবে। যারা এখনো পর্ন অ্যাডিকশন নিয়ে স্ট্রাগল করছেন, কিন্তু মুভি দেখা ছাড়েননি, তারা একটু চিন্তা করলেই ব্যাপারটা বুঝেতে পারবেন।


আরো পড়ুনঃ
  1. সেক্স যখন স্ক্রিনেই উপভোগ্য, ভালবাসা নামক শব্দটাই তখন দুর্বোধ্য - New!
  2. স্যার আইজ্যাক নিউটন এর জীবনী
  3. হার না মানা সফলতার গল্প - মাইকেল ফেলপস

আপনি আপনার জীবনের ফেলে আসা দিনগুলোর দিকে তাকান, এই মুভিগুলো কতবার আপনার জন্য পর্নের ট্রিগার হিসেবে কাজ করেছে যানেন? কত রাত আপনি মুভি দেখতে গিয়ে এমন সিনের মুখোমুখি হয়েছেন, যা আপনাকে পর্ন দেখতে বাধ্য করেছে, নষ্ট হয়েছে সেই রাতের ঘুম, পরের দিনের সকাল এবং সারাদিনের কাজের স্পৃহা।

একবার (তাদের মতে) এক সফল ব্যবসায়ীর জীবনী নিয়ে বানানো একটি মুভি দেখছিলাম। মুভিতে জর্ডান নামক এক লোক অ্যামেরিকার বাকি আট-দশটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের মতোই জীবন যাপন করত। কিন্তু তার অন্তরে জীবনে সফল হওয়ার চরম স্পৃহা কাজ করত। তাই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সে কোন এক ব্রোকারেজ ফার্মে জয়েন করে। সেখানে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের খেলা দেখে তার চোখ কপালে উঠে যায়। ফার্মের মালিক কীভাবে এতকিছু ম্যানেজ করেন? তার জীবনে এতো বড় সাফল্যের পেছনে রহস্যই বা কী? এসব প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। একদিন ফার্মের মালিকের সাথে বাহিরে লাঞ্চ করতে যায় সে। এ সুযোগে জিজ্ঞাস করে বসে,
স্যার! আপনার এ সফলতার পেছনে গোপন রহস্য কী?
মালিক: দেখ! ব্রোকার বিজনেসে সাকসেসফুল হওয়ার জন্য তোমার দুটো জিনিস লাগবে। প্রথমত, তোমাকে রিল্যাক্সড থাকতে হবে।
-আচ্ছা তুমি কি মাস্টারবেট কর? মালিক জিজ্ঞাস করলেন।
জর্ডান,- জি স্যার।
-সপ্তাহে কয়বার?
-এই… ৩-৪ বার।
-আমি কয়বার করি, জান?
-কয়বার?
-আমি প্রতিদিন ২ বার মাস্টারবেট করি। একবার সকালে ব্যায়াম করার পর, আরেকবার দুপুরের দিকে। একারণেই আমি এতো রিল্যাক্সড থাকি। আর দ্বিতীয় জিনিসটা হচ্ছে কোকেন। এটা আমাকে দ্রুত কাজ করতে সহায়তা করে। এছাড়াও তাকে অধিক অর্থ উপার্যনের কিছু শয়তানী বুদ্ধি শিখিয়ে দেয়া হয়।

জর্ডান খুব ভালোভাবেই এই ফালতু উপদেশগুলো তার মাথায় ভরে নেয় এবং মুভির পরবর্তী সিনগুলোতে উপদেশগুলো কাজে লাগিয়ে তাকে একসময় বিলিয়নিয়ার হয়ে যেতে দেখা যায়।

অথচ যারা পর্ন এবং মাস্টারবেশন আসক্তিতে ভুগছেন তারা সবাই জানেন যে মাস্টারবেশন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজের ক্ষেত্রে কত বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়, কত ছেলেরা এ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ করে, কত সংসার ভেঙ্গে যায়। আর এসব মুভিতে মাস্টারবেশনকে জীবনে সফল হওয়ার টিপস হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এছাড়াও পর্নকে তারা কীভাবে স্বাভাবিক করে তুলছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। হলিউড এবং এর মত অন্যান্য মুভি ইন্ডাস্ট্রি এভাবেই প্রতিনিয়ত মিথ্যা দিয়ে আমাদের ইয়াং জেনারেশনের মগজ ধোলাই করে চলছে।

তাই যারা পর্ন আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে চাচ্ছেন তাদের উচিত এসব মুভি থেকে নিজেদের বিরত রাখা। যারা আপাতত পর্ন দেখছেন না, কিন্তু নিয়মিত মুভি, টিভি সিরিজ দেখেন তাদেরও উচিত এসব মুভি বয়কট করা। কারণ আজ যারা পর্ন অ্যাডিক্টেড তারাও একসময় পর্ন দেখত না। কোন এক আইটেম সং কিংবা মুভির সফটকোর দৃশ্য তাদের ধীরেধীরে এ পথে নিয়ে এসেছে, পর্নোগ্রাফি নামক পিচ্ছিল পাথরে একদিন তারা পা রেখেছিল, সেখান থেকেই পিছলে অনেকে এমন এক গহ্বরে গিয়ে পৌঁছেছে যেখান থেকে বেরিয়ে আসার কোন পথ আজ খুঁজে পাচ্ছে না।

সূত্রঃ তাসাউফ

Post a Comment

Previous Post Next Post